অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন প্রক্রিয়া এখন অনেকটা সহজ। আপনি সহজেই আপনার হাতে থাকা স্মার্টফোন দিয়ে ঘরে বসেই অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন করতে পারবেন। এখানে এ বিষয়ে পুরো নিয়মাবলী বিস্তারিত চিত্রসহকারে দেখানো হলো। জাতীয় পরিচয়পত্র কিভাবে সংশোধন করতে হয় জানতে এখানে ক্লিক করুন।
Table of Contents
অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন প্রক্রিয়া
নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন প্রক্রিয়াটি আমরা কয়েকটি ভাগে সম্পন্ন করব। নিম্নে এ ভাগ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
অ্যাকাউন্ট রেজিস্ট্রেশন করা
প্রথমে যে কোন ওয়েব ব্রাউজারের অ্যাড্রেস বারে services.nidw.gov.bd টাইপ করে “বাংলাদেশ ইলেকশন কমিশন” এর ওয়েব সাইটে প্রবেশ করুন অথবা এখানে ক্লিক করুন। নিম্নের চিত্রের মতো একটি ওয়েব পেজ এ আপনাকে নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে চিহ্নিত নতুন নিবন্ধনের জন্য আবেদন এর “আবেদন করুন” অপশন নির্বাচন করুন।
এবারে আপনাকে নতুন অ্যাকাউন্ট নিবন্ধন করার জন্য নিম্নের চিত্রের মতো ইন্টারফেস এর ওয়েব পেজ এ নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে প্রথমে আপনার জন্ম নিবন্ধন তথ্য অনুযায়ী ইংরেজিতে পুরো নাম, এরপর জন্ম তারিখ বসিয়ে নিতে হবে।
এরপর একটি ক্যাপচা ভেরিফিকেশন করে নিতে হবে। অর্থাৎ অস্পষ্ট টেক্সটগুলোতে যে অক্ষরগুলো রয়েছে সেগুলো নিচের ঘরে বসিয়ে নিয়ে নিচে থাকা “বহাল” অপশন নির্বাচন করুন।
এবার আপনাকে নিম্নের চিত্রের মতো ইন্টারফেস প্রদর্শন করা হবে। সেখানে একটি মোবাইল নম্বর বসিয়ে নিন। মনে রাখবেন এখানে মোবাইল নম্বর দেবার জন্য শূণ্য পূর্বের ঘরে আগে থেকেই দেয়া আছে, তাই আপনি শূণ্য ব্যতিত বাকী নম্বরগুলো দিয়ে নিয়ে নিচের দিকে থাকা “বার্তা পাঠান” অপশন নির্বাচন করুন।
কিছুক্ষণের মধ্যে উক্ত মোবাইল নম্বরে একটি ছয় সংখ্যার ওটিপি পাঠানো হবে। এক্ষেত্রে মনে রাখা ভালো, উক্ত ফোন নম্বরে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স থাকতে হবে।
ওটিপি বসিয়ে নিয়ে “বহাল” অপশন নির্বাচন করুন। এ পর্যায়ে আপনাকে নিম্নের চিত্রের মতো ইন্টারফেস প্রদর্শন করা হবে।
এখানে আপনি একটি ইউজার নেম, পাসওয়ার্ড সেট করে নিয়ে “বহাল” অপশন নির্বাচন করুন। পাসওয়ার্ড দেবার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন।
বিস্তারিত তথ্যাদি অন্তর্ভূক্ত করতে প্রোফাইল এডিট করা
এবারে নিম্নের চিত্রের মতো প্রোফাইল অপশন নির্বাচন করুন।
এবারে আপনাকে নিম্নের চিত্রের মতো পেজ এ নিয়ে যাওয়া হবে। সেখানে আপনার যাবতীয় তথ্যাদি যুক্ত করার জন্য চিহ্নিত “এডিট” অপশনটি নির্বাচন করুন।
এডিট অপশনের প্রথম অংশ
এবারে একে একে এডিট অংশের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি দিয়ে নিন। যেমন, নাম (বাংলায়), জন্ম নিবন্ধন নম্বর, লিঙ্গ, রক্তের গ্রুপ, পিতা ও মাতার তথ্যাদি, ভাই-বোন এর তথ্যাদি ইত্যাদি।
এডিট অপশনের দ্বিতীয় অংশ
ব্যক্তিগত তথ্যাদি ট্যাব এর সকল তথ্যাদি প্রদান করার পর ডানদিকে “অন্যান্য তথ্য” ট্যাব এ ক্লিক করে সেখানে থাকা শিক্ষাগত যোগ্যতা, পেশা, অসমর্থ্যতা, সনাক্ত করণ চিহ্ন, ড্রাইভিং লাইসেন্স নম্বর, পাসপোর্ট নম্বর, ধর্ম ইত্যাদি তথ্যাদি একে একে দিয়ে নিন।
এডিট অপশনের তৃতীয় অংশ
একইভাবে “ঠিকানা” ট্যাব এর যাবতীয় তথ্যাদি (নিম্নের চিত্রের মতো ইন্টারফেস এ) দিয়ে নিন।
ঠিকানা দেবার ক্ষেত্রে বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটিকর্পোরেশন, ইউনিয়ন, মৌজা/মহল্লা, ওয়ার্ড নম্বর, গ্রাম/রাস্তা, হোল্ডিং নম্বর, পোস্ট কোড ইত্যাদি তথ্যাদির প্রয়োজন হবে।
সব কিছু ঠিক থাকলে উপরের ডানদিকে “পরবর্তী” অপশন নির্বাচন করুন।
এবারে দ্বিতীয় সেকশন নির্বাচন করলে দেখতে পাবেন সেখানে “কাগজপত্রের প্রয়োজন নেই“ লেখা রয়েছে। অর্থাৎ যাবতীয় প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্রাদি আপনাকে হাতে হাতে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে দাখিল করতে হবে। একইভাবে তৃতীয় সেকশনেও তা থাকবে।
আবেদন সাবমিট করা
তৃতীয় ধাপে নিশ্চিত করুন সেকশনে থাকা ডান দিকে নিম্নের চিত্রের মতো “সাবমিট” অপশন নির্বাচন করুন। এতে করে আপনার আবেদনটি অনলাইনের মাধ্যমে সাবমিট করা হবে।
আবেদন ডাউনলোড করা
সাবমিট করার পর আপনার আবেদনটির কপি ডাউনলোড করার জন্য নিম্নের চিত্রের মতো ডাউনলোড অপশন দেখতে পাবেন।
তা নির্বাচন করলে নিম্নের চিত্রের মতো আপনার আবেদন করা ফরমটি দেখতে পাবেন।
আবেদনে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংযোজন করা
আবেদন ফরমটির নিচের দিকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে। সে সম্পর্কে নিম্নে আলোচনা করা হলো।
আবেদন ফরমের ৩২ নং ঘরে আপনাকে অবশ্যই বাদ পড়ার কারণ উল্লেখ করতে হবে। এক্ষেত্রে আপনি এলাকার বাইরে অবস্থান, অথবা গ্রহণযোগ্য কোন কারণ উল্লেখ করতে হবে।
৩৩নং ঘরের শেষে “আবেদনকারীর স্বাক্ষর/টিপসহি” আপনাকে স্বাক্ষর করতে হবে।
৩৪নং ঘরে আপনার এলাকার সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান/ওয়ার্ড মেম্বার/পৌরসভার ক্ষেত্রে মেয়র এর জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর বসিয়ে নিতে হবে। উক্ত ঘরের শেষের দিকে ৩৫ নং অপশনে তার স্বাক্ষর গ্রহণ করতে হবে।
৩৬ ও ৩৮নং ঘরে আপনার নিজে থেকে কোন তথ্য দেবার প্রয়োজন নেই।
৪০নং ঘরে আপনার পার্শ্ববর্তী ইতিপূর্বে ভোটার হয়েছেন এমন কোন আত্মীয়-স্বজন (যেমন, চাচা, বড় ভাই ইত্যাদি) এর নাম প্রদান করবেন। ৪১নং ঘরে তার জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর এবং তার পাশে ৪২নং ঘরে উনার স্বাক্ষর দিয়ে নেবেন।
কি কি কাগজপত্রাদি দাখিল করতে হবে
- হোল্ডিং ট্যাক্স বা বাড়ির খাজনা পরিশোধের কপি।
- শিক্ষাগত যোগ্যতার কপি।
- পিতা ও মাতার জাতীয় পরিচয়পত্রের রঙিন কপি।
- ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ।
- নাগরিকত্ব সনদপত্র।
- বিবাহিতদের ক্ষেত্রে কাবিননামা এর কপি।
- রক্তের গ্রুপ পরীক্ষার রিপোর্ট।
- বিবাহিত হলে স্বামী অথবা স্ত্রীর জাতীয় পরিচয়পত্র এর কপি।
- বিদ্যুৎ বিল বা গ্যাস বিল প্রদানের কপি।
সবশেষে আবেদন ফরমের সাথে উল্লেখিত কাগজপত্রাদিসহ আপনার উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করে তা জমা দেবেন। পরবর্তীতে বায়োমেট্রিক এনরোলমেন্ট এর জন্য আপনাকে একটি তারিখ আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে। উক্ত তারিখে আপনাকে উপজেলা নির্বাচন অফিসে যোগাযোগ করতে হবে। এর পরবর্তী ২০-২৫ দিন পরে আপনার প্রদানকৃত মোবাইল নম্বরে এসএমএস পাঠিয়ে আপনাকে জানিয়ে দেয়া হবে যে, আপনার জাতীয় পরিচয়পত্র কপি ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।
আশা করছি আপনি ঘরে বসেই অনলাইনে নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন করতে পেরেছেন। এ বিষয়ে আপনার মূল্যবান মতামত জানাতে ভুলবেন না।