সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশন হচ্ছে প্রযুক্তির অন্যতম প্রধান হাতিয়ার কম্পিউটারের প্রাণ হচ্ছে। এই পোষ্টে আমরা বিভিন্ন ধরণের সফটওয়্যার, অ্যাপ্লিকেশন, প্রোগ্রাম ইত্যাদি বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো।
Table of Contents
সফটওয়্যার কি?
Software (সফটওয়্যার) বলতে প্রোগ্রাম, নির্দেশাবলী এবং এ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় তথ্যাবলীর একটি সমষ্টিকে বোঝায়। যা একটি কম্পিউটার সিস্টেমকে নির্দিষ্ট কাজ বা কার্য সম্পাদন করতে সক্ষম করে থাকে। আধুনিক প্রযুক্তির অত্যাবশ্যকীয় উপাদান যেমন কম্পিউটার এবং বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ডিভাইসগুলিতে সফটওয়্যারের মাধ্যমে নানা ধরণের তথ্য-উপাত্তের ভিত্তিতে বিশ্লেষণ করতঃ কাঙ্খিত ফলাফল পাওয়া যায়।

সফটওয়্যারকে দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। একটি হলো সিস্টেম সফটওয়্যার এবং অন্যটি অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার। সিস্টেম সফটওয়্যার বলতে বুঝায় অপারেটিং সিস্টেম, ডিভাইস ড্রাইভার এবং ইউটিলিটি প্রোগ্রাম। যা একটি কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারগুলিকে পরিচালনা এবং নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে অন্যান্য সফটওয়্যার চালানোর জন্য একটি পরিবেশ তৈরী করে থাকে।
অন্যদিকে অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে ডিজাইন করে কিছু প্রোগ্রামকে অন্তর্ভুক্ত করে তৈরী করা হয়ে থাকে। যেমন ওয়ার্ড প্রসেসর, ওয়েব ব্রাউজার, গ্রাফিক ডিজাইন টুল, ভিডিও গেম ইত্যাদি। এই অ্যাপ্লিকেশনগুলি ব্যবহারকারীদের কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করতে এবং একজন ব্যবহারকারীর প্রয়োজনের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদনা করার সুবিধা দিয়ে
দিন দিন সফটওয়্যার উন্নীত করণের সাথে সাথে এই প্রোগ্রামগুলির ডিজাইন, কোডিং ইত্যাদি উন্নত হতে উন্নততর করা হচ্ছে। সামগ্রিকভাবে সফটওয়্যার প্রযুক্তিগত অগ্রগতির মেরুদণ্ড হিসাবে কাজ করে আসছে। যা কম্পিউটার এবং এ ধরণের ডিভাইসগুলিকে নানা ধরণের কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম করে তুলছে। যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করে
এ সকল সফটওয়্যার কম্পিউটারে ইন্সটল করার পর একজন ব্যবহারকারী চাইলে সহজেই তা আবার করে ফেলতে
অ্যাপ্লিকেশন কি?
অ্যাপ্লিকেশন বা অ্যাপ একটি এমন ধরণের সফটওয়্যার যা নির্দিষ্ট এক ধরণের কাজ সম্পাদন করতে বা একটি কম্পিউটার বা ইলেকট্রনিক ডিভাইসে নির্দিষ্ট কার্যকারিতা প্রদানের লক্ষ্যে ডিজাইন করা হয়ে থাকে। সিস্টেম সফটওয়্যার যা বিভিন্ন হার্ডওয়্যার পরিচালনা করে থাকে এবং অন্যান্য সফটওয়্যার এর জন্য একটি পরিবেশ তৈরী করার ফলে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশনসমূহকে ব্যবহার উপযোগী এবং ব্যক্তিগত চাহিদা পূরণ করার লক্ষ্যে তৈরী করা হয়ে থাকে।
সাধারণত অ্যাপ্লিকেশনসমূহ ডেস্কটপ কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, এমনকি পরিধানযোগ্য ডিভাইস, যেমন স্মার্টওয়াচ ইত্যাদি বিভিন্ন প্ল্যাটফরমের জন্য পাওয়া যায়। এ সকল অ্যাপ্লিকেশন যোগাযোগ, বিনোদন, শিক্ষা, অর্থ, স্বাস্থ্যসহ গেমিং এর মতো বিষয়গুলিতে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এ ছাড়াও এর দ্বারা; ডকুমেন্ট তৈরি করা, ইমেইল পাঠানো, ফটো সম্পাদনা করা, ইন্টারনেট ব্রাউজ করা, আর্থিক লেন-দেন করা, ফিটনেস ট্র্যাক করা, গেম খেলাসহ আরও অনেক কিছু সুবিধা দিয়ে থাকে।
ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা উন্নত করতে অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপারগণ সফটওয়্যারসমূহ ডিজাইনিং, কোডিং এবং বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে এটি ব্যবহারকারীর প্রয়োজনী কার্যাবলী নির্ভরযোগ্যভাবে পূরণ করার সক্ষমতা বৃদ্ধি করে থাকেন।
স্যামসাং গ্যালাক্সি রিং প্রযুক্তির এই সেরা আবিষ্কার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশনের মধ্যে পার্থক্য কি?
সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন এর মধ্যে প্রধান পার্থক্য হচ্ছে এর ব্যবহারিক উদ্দেশ্যের মধ্যে।
সফটওয়্যার বলতে কম্পিউটার প্রোগ্রাম, নির্দেশাবলী এবং ডেটার একটি বিস্তৃত পরিসরকে অন্তর্ভুক্ত করে যা একটি কম্পিউটার সিস্টেমকে নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করতে সক্ষম করে। এটি সিস্টেম সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার উভয়ই অন্তর্ভুক্ত। সিস্টেম সফটওয়্যার কম্পিউটারের হার্ডওয়্যারগুলিকে পরিচালনা করে এবং নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে অন্যান্য অ্যাপ্লিকেশন চালানোর জন্য একটি পরিবেশ তৈরী করে থাকে।
সিস্টেম সফটওয়্যারের উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে অপারেটিং সিস্টেম, ডিভাইস ড্রাইভার, ইউটিলিটি প্রোগ্রাম ইত্যাদি। অন্যদিকে, অ্যাপ্লিকেশন একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা প্রোগ্রামগুলিকে বোঝায়, যেমন ওয়ার্ড প্রসেসর, ওয়েব ব্রাউজার, গ্রাফিক ডিজাইন টুল, ভিডিও গেম ইত্যাদি।
অ্যাপ্লিকেশন “অ্যাপ” নামেও পরিচিত যা একটি নির্দিষ্ট ধরনের সফটওয়্যার। এগুলি ব্যবহারকারীর নির্দিষ্ট কাজ করতে বা নির্দিষ্ট কার্যকারিতা প্রদানের জন্য ডিজাইন করা হয়ে থাকে। অ্যাপ্লিকেশন ডেস্কটপ কম্পিউটার, ল্যাপটপ, স্মার্টফোন, ট্যাবলেটসহ পরিধানযোগ্য ডিভাইস তথা বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে চলতে পারে। এগুলিকে প্রায়শই তাদের উদ্দেশ্যের উপর ভিত্তি করে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, যেমন যোগাযোগের অ্যাপ, বিনোদন অ্যাপ, শিক্ষা অ্যাপ ইত্যাদি।
অপরদিকে সফটওয়্যার একটি বিস্তৃত শব্দ যা সিস্টেম সফটওয়্যার এবং অ্যাপ্লিকেশন সফটওয়্যার উভয়কেই অন্তর্ভুক্ত করে। যখন অ্যাপ্লিকেশনগুলি এমন একটি সফটওয়্যারের উপসেট যা ব্যবহারকারীর মুখোমুখি এবং নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে ডিজাইন করা হয়। অ্যাপ্লিকেশন এক ধরনের সফটওয়্যারের কার্যকারিতা প্রদান করে থাকে।
প্রোগ্রাম কি?
প্রোগ্রাম বলতে একটি নির্দিষ্ট প্রোগ্রামিং ভাষায় লিখিত নির্দেশাবলীর একটি সেট যা একটি কম্পিউটারকে নির্দেশনা দিয়ে থাকে যে কীভাবে এটি নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করবে বা একটি সমস্যার সমাধান করবে। যেকোনো সফটওয়্যার বিকাশের মূলে রয়েছে এর প্রোগ্রাম। এ সকল প্রোগ্রাম সফটওয়্যার বা অ্যাপ্লিকেশন-কে কার্যকর করতে সক্ষম।
Program সাধারণ স্ক্রিপ্ট থেকে জটিল সফটওয়্যার সিস্টেম পর্যন্ত হতে পারে। একটি প্রোগ্রাম সাধারণত একজন প্রোগ্রামার দ্বারা তৈরি করা হয়ে থাকে। যিনি বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষা ব্যবহার করে কোড লিখে থাকেন। এ লিখিত কোডগুলি যৌক্তিক বিভিন্ন নির্দেশাবলী নিয়ে গঠিত যা পছন্দসই ফলাফল অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ অথবা বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপ সম্পাদনের উদ্দেশ্যে বিভিন্ন ফাংশনকে অন্তর্ভুক্ত করে থাকে। যেমন ডেটা প্রক্রিয়াকরণ, গাণিতিক গণনা, ব্যবহারকারীর মিথস্ক্রিয়া, ফাইল পরিচালনা, নেটওয়ার্ক যোগাযোগ এবং আরও অনেক কিছু।
একবার একটি প্রোগ্রাম লেখা হয়ে গেলে কম্পিউটার দ্বারা চালানোর জন্য এটিকে কম্পাইল বা ব্যাখ্যা করতে হয়ে থাকে। প্রোগ্রামগুলি কম্পিউটিং জগতে একটি মৌলিক ভূমিকা পালন করে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তৈরী এ সকল প্রোগ্রাম ব্যবহার করে তৈরী সফটওয়্যার; যা আমাদের ডিজিটাল জীবন পরিচালনায় অসংখ্য ভূমিকা পালন করছে।
প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ কি?
প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ হচ্ছে একটি নিয়ম, সিনট্যাক্স শর্তাবলী ইত্যাদির একটি সুসংবদ্ধ সেট যা প্রোগ্রামারদের কম্পিউটারের সাথে যোগাযোগ করতে এবং সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন তৈরীর জন্য নির্দেশাবলীর সমিষ্টি। প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এমনভাবে তৈরী করা হয় যার অ্যালগরিদম একটি বিশেষ কাজ করে যা মানুষ এবং মেশিন উভয়ই বুঝতে পারে। প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ বিশেষ করে, ভেরিয়েবল, ডেটা টাইপ, কন্ট্রোল স্ট্রাকচার, ফাংশন, ক্লাস এবং অন্যান্য বিল্ডিং ব্লক এর সমন্বয়ে প্রোগ্রাম তৈরি করার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে।

অনেক প্রকারের প্রোগ্রামিং ভাষা রয়েছে। যর প্রতিটির নিজস্ব শক্তি, দুর্বলতা এবং প্রয়োগের আলাদা আলাদা ক্ষেত্র রয়েছে। কিছু জনপ্রিয় প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর মধ্যে রয়েছে পাইথনজাভা সি++, জাভাস্ক্রিপ্ট, রুবি, সি# ইত্যাদি। বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ বিভিন্ন উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। যেমন ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, মোবাইল অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, সায়েন্টিফিক কম্পিউটিং, গেম ডেভেলপমেন্ট ইত্যাদি আরও অনেক কিছু।
প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ এর প্রয়োজনীয়তা, উৎপাদনকারীর পরিচিতি, কর্মক্ষমতা বিবেচনা ইত্যাদি অকাঠামোর মতো বিষয়গুলির উপর নির্ভর করে ব্যবহৃত হয়ে থাকে। পরিশেষে বলা যায়, প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ হচ্ছে সেই টুল যা প্রোগ্রামারদের তাদের কল্পনা-ধারনাকে জীবন্ত করে তুলতে এবং সফটওয়্যারের মাধ্যমে সমাধান তৈরি করতে সক্ষম করে যা প্রযুক্তিগত অগ্রগতির প্রধান অস্ত্র।
ওপেন সোর্স কি?
আমরা সকলেই জানি কম্পিউটারের নিজস্ব কোন মেধা নেই তাই কম্পিউটার আমাদের মুখে ভাষা বোঝে না। ইলেকট্রিক যন্ত্র হিসেবে কম্পিউটার শুধুমাত্র বৈদ্যুতিক সিগন্যাল বুঝতে পারে। অর্থাৎ বিদ্যু প্রবাহ “আছে” আর “নেই”। বিজ্ঞানিগণ এই “আছে” আর “নেই” কে কাজে লাগিয়ে কম্পিউটার যন্ত্রের সাহায্যে দ্রুত এবং নির্ভুলভাবে কাজ করার জন্য একটি পদ্ধতি বা নির্দেশনা ভাষা আবিষ্কার করেছেন। একে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ বলা হয়ে থাকে। আবার এই ভাষা দিয়ে একটি পরিপূর্ণ প্রোগ্রাম তৈরী করা হয়ে থাকে। যাকে প্রোগ্রামিং এর ভাষায় কোড বলা হয়।

আবার কম্পাইলার বা ইন্টারপ্রেটার এই কোডকে কম্পিউটারের ভাষায় পরিণত করে কোডের ভাষায় নির্দিষ্ট করে দেয়া কাজটি করে থাকে। এমনিভাবে অসংখ্য সফটওয়্যারসমূহ এভাবেই প্রোগ্রামিং কোড লিখে লিখে তৈরি করা হয়ে থাকে। এই সকল প্রোগ্রামের বা সফটওয়্যারের উন্নয়ন করার প্রয়োজন হলে তা উক্ত সফটওয়্যারের জন্য লিখিত কোডের মধ্যেই পরিবর্তন, পরিবর্ধন বা সংযোজন করেই করতে হয়। এই প্রোগ্রামিং কোডকে বলা হয় সোর্সকোড।
ওপেন সোর্স বলতে আমরা সেই সকল সফটওয়্যারকেই বুঝি, যে সফটওয়্যারগুলোর সোর্সকোড সকলের জন্য উন্মুক্ত। অর্থাৎ যে কেউ এর কোড ব্যবহার করতে পারবে। তবে একটি বিশেষ লাইসেন্সের আওতায় এ সোর্সকোডসমূহ সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকে। এই ওপেন সোর্স ব্যতিত বাকী সফটওয়্যারগুলো তাদের প্রোগ্রামিং কোড সকলের জন্য ব্যবহারের অনুমতি দেয় না।
জনপ্রিয় কিছু ওপেনসোর্স সফটওয়্যারের উদাহরণ হলো- লিনাক্স কার্নেল, ক্রোমিয়াম ব্রাউজার, মোজিলা ফায়ারফক্স ব্রাউজার, ভিএলসি মিডিয়া প্লেয়ার, লিব্রা অফিস, ওয়ার্ডপ্রেস, পাইথন, ব্লেন্ডার, ইঙ্কস্কেপ ইত্যাদি।
ওপেন সোর্স এবং ফ্রি সফটওয়্যারের পার্থক্য
যেসব সফটওয়্যার ব্যবহার করতে কোনো অর্থ ব্যয় করতে হয় না সেগুলোই মূলত ফ্রি সফটওয়্যার। যেমন— গুগল ক্রোম , কেএম প্লেয়ার, পিকাসা ইত্যাদি। তবে মনে রাখা ভালো যে, সকল ফ্রি সফটওয়্যার ওপেনসোর্স হয় না। অর্থাৎ ফ্রি হলেও এ সকল সফটওয়্যারের সোর্স কোড বিশেষভাবে সংরক্ষিত থাকে। যাতে অন্য কেউ নিজের প্রয়োজন মতো এর কোডের কোনো পরিবর্তন করতে না পারে।
আবার সব ওপেন সোর্স সফটওয়্যারই কিন্তু ফ্রি নয়। অপরদিকে সব ফ্রি সফটওয়্যারও ওপেন সোর্স নাও হতে পারে। বেশির ভাগ ওপেন সোর্স সফটওয়্যারই ফ্রি। তবে বেশ কিছু ওপেনসোর্স সফটওয়্যার রয়েছে যাদের তৈরী করা সফটওয়্যার ব্যবহারকারীকে সার্ভিস এবং সাপোর্ট দেবার বদলে কিছু অর্থ প্রদান করতে হয়ে থাকে।
পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন কি?
পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন বা stand-alone অ্যাপ্লিকেশন যা সাধারণত “পোর্টেবল অ্যাপ” নামেও পরিচিত। এটি এমন একটি সফটওয়্যার প্রোগ্রাম যা স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং একটি পোর্টেবল তথা সহজেই বহনযোগ্য স্টোরেজ ডিভাইস থেকে এই সকল অ্যাপ্লিকেশন সরাসরি চালানোর জন্য ডিজাইন করা থাকে। এতে এ সকল অ্যাপ্লিকেশন কোনো রকম ইন্সটলের ঝামেলা নেই। যেমন একটি USB ফ্ল্যাশ ড্রাইভ বা একটি এক্সটার্নাল হার্ড ড্রাইভ দ্বারা হোস্ট কম্পিউটারে ইনস্টলেশন সিস্টেম।
সাধারণ অ্যাপ্লিকেশনগুলিতে একে ব্যবহারের জন্য তা অপারেটিং সিস্টেমে ইনস্টলেশন অথবা পরিবর্তনের প্রয়োজন হয়ে থাকে। কিন্তু পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশনসমূহ তুলনামূলক কম মেগাবাইটের এবং এটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে অপারেটিং সিস্টেম থেকে স্বাধীনভাবে পরিচালিত হবার জন্য বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়ে থাকে।
একজন ব্যবহারকারী সহজেই তাদের এ প্রিয় অ্যাপ্লিকেশন এবং প্রয়োজনীয় ডেটা অনায়াসে বহন করতে পারেন৷ পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশনসমূহ যেকোনো কম্পিউটারে এর সিস্টেম রেজিস্ট্রিতে কোনো রকম পরিবর্তন না করেই ব্যবহার করার সুবিধা প্রদান করে থাকে। পোর্টেবল অ্যাপ্লিকেশন হিসেবে বিভিন্ন ধরণের মাল্টিমিডিয়া প্লেয়ার, ওয়েব ব্রাউজার, টেক্সট ইডিটর ইত্যাদি পাওয়া যায়।
এক্সিকিউটেবল (EXE) ফাইল কি?
EXE ফাইল বা এক্সিকিউটেবল ফাইল সাধারণত EXE ফাইল নামে পরিচিত। এটি এক ধরণের ফাইল ফরম্যাট (.exe) যা উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে প্রোগ্রাম বা অ্যাপ্লিকেশন সমুহ ইন্সটলের জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। এই “.exe” এক্সটেনশনটি সাধারণত এক্সিকিউটেবল ফাইলের সাথে যুক্ত থাকে।
একটি EXE ফাইলে প্রোগ্রামিং কোড থাকে। এতে বিস্তারিত নির্দেশাবলীর একটি সিরিজ থাকে যা সরাসরি কম্পিউটারের প্রসেসর দ্বারা কার্যকর করা হয়ে থাকে। এই নির্দেশাবলী একটি নির্দিষ্ট প্রোগ্রামের ইন্টারফেস এবং উক্ত প্রোগ্রামের সকল কার্যক্রম লিপিবদ্ধ থাকে। একজন ব্যবহারকারী যখন একটি EXE ফাইলে ডাবল-ক্লিক করেন, অপারেটিং সিস্টেম এই ফাইলটিকে মেমরিতে লোড করে এতে থাকা নির্দেশাবলী অনুযায়ী তা করতে শুরু করে।

এক্সিকিউটেবল ফাইলসমূহ সাধারণ কম্পাইলেশন নামক একটি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি করা হয়ে থাকে। যেখানে প্রোগ্রামটির উৎস কোড, মেশিন কোডে অনুবাদ করা হয়। এই মেশিন কোড কোন অপারেটিং সিস্টেম এবং কোন প্রসেসর সাথে যৌথভাবে এক যোগে ব্যবহারকারীকে প্রোগ্রামটির মাধ্যমে কিছু নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করা নিশ্চিত করে থাকে।
EXE ফাইলগুলি সাধারণত ছোট ইউটিলিটি প্রোগ্রাম থেকে শুরু করে বড় বড় সফটওয়্যার অ্যাপ্লিকেশন আকারে হতে পারে। এটি মনে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে অপরিচিত বা বিশ্বস্ত নয় এমন উৎস হতে প্রাপ্ত যে কোনো ধরণের EXE ফাইলগুলি ব্যবহারের সময় অত্যন্ত সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কারণ এতে সম্ভাব্য ক্ষতিকারক কোড থাকতে পারে যা আপনার কম্পিউটারের ক্ষতি করতে পারে।
ফাইল এক্সটেনশন কি?
ফাইল এক্সটেনশন হচ্ছে একটি ফাইলের নামের শেষে যুক্ত একটি বিশেষ সংকেত যা আধুনিক অপারেটিং সিস্টেমে সাধারণত একটি ডট (.) দ্বারা পৃথক করা হয়ে থাকে। এক্সটেনশন আমাদের কম্পিউটারে থাকা নানা ধরণের অসংখ্য ফাইলের বিন্যাস সনাক্ত করতে এবং কম্পিউটার ও ব্যবহারকারীকে এর বিষয়বস্তু সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রদান করতে ব্যবহৃত হয়। ফাইল এক্সটেনশন কীভাবে একটি ফাইল পরিচালনা করা হবে এবং ফাইলটি খুলতে, সম্পাদনা করতে বা চালানোর জন্য কোন প্রোগ্রাম বা অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করা হবে তা নির্ধারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
প্রতিটি ফাইল এক্সটেনশন সাধারণত আলাদা একটি নির্দিষ্ট ফাইলের সাথে যুক্ত থাকে, যেমন টেক্সট ডকুমেন্টের জন্য .txt, ইমেজ ফাইলের জন্য .jpg, অডিও ফাইলের জন্য .mp3 বা এক্সিকিউটেবল প্রোগ্রামের জন্য .exe ইত্যাদি।
আশা করছি এই পোষ্টের মাধ্যমে আপনি সফ্টওয়্যার ও অ্যাপ্লিকেশন বিষয়ক বিস্তারিত ধারণা পেয়েছেন। উপকারী মনে হলে পোষ্টটি শেয়ার করতে ভুলবেন না।