কম্পিউটারে বাংলা টাইপ করার জন্য অত্যন্ত জনপ্রিয় কিবোর্ড হচ্ছে বিজয়। এখানে আমরা শিখবো কিভাবে বিজয় কিবোর্ড ইনস্টল করবেন। সেই সাথে বিজয় কিবোর্ড সেটিংস সম্পর্কে বিস্তারিত।
মাইক্রোসফট অফিস ২০০৭ কাস্টম ইনস্টল করা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
Table of Contents
বিজয় একুশে কি?
বাংলা লেখার জন্য বাংলাদেশে সব থেকে পুরাতন এবং জনপ্রিয় সফটওয়্যার হচ্ছে বিজয়। প্রায় প্রতিটি অফিস আদালতে বা প্রায় সকল কম্পিউটারে টাইপিং এর কাজে এটি দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। বিজয় কিবোর্ড একটি অ্যাপ্লিকেশনের নাম। প্রথম দিকে এর প্রথম ভার্সন “বিজয়” বাজারে আসে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৮৮ সালে। পরবর্তীতে এর অনেক নতুন নতুন সংস্করণ বাজারে আসে। “বিজয় একুশে” তার-ই একটি ভার্সন। যা ২০২০ সালের দিকে বাজারে আসে। বিজয় এর অনেক ভার্সন রয়েছে। তন্মধ্যে বিজয় একুশে সব থেকে ঝামেলামুক্ত ভার্সন।
জেনে রাখা ভালো বিজয়ের সকল ভার্সন অর্থ দিয়ে ক্রয় করে নিতে হয়। বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন। অপর দিকে বাংলা লেখার আর একটি উন্মুক্ত তথা বিনামূল্যের অ্যাপ্লিকেশন হলো অভ্র। অভ্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন।
বিজয় কিবোর্ড ব্যবহার কেন শেখা উচিৎ?
দীর্ঘদিন হতে বিভিন্ন অফিস আদালতে ব্যবহৃত হয়ে আসা এবং কম্পিউটারে দ্রুত বাংলা লেখার সব থেকে পুরাতন পদ্ধতি হচ্ছে বিজয় কি-বোর্ড। তাই আমাদের দেশে যে কোনো কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বিজয় কি-বোর্ড দিয়েই প্রশিক্ষণ দেয়া হয়ে থাকে। সহজ ইন্টারফেস, সহজ অক্ষর বিন্যাস, সহজেই যুক্তাক্ষর লেখার পদ্ধতি এ সকল কারণে বিজয় কি-বোর্ড বিশেষভাবে পরিচিতি লাভ করেছে। এ জন্য আমাদের এ সফটওয়্যারটির সম্পর্কে জেনে রাখা উচিত। বিশেষ করে কোন দপ্তরে টাইপিং চাকুরির জন্য তো এটি সম্পর্কে অবশ্যই আপনাকে জেনে রাখতে হবে।
কিভাবে বিজয় কিবোর্ড ইনস্টল করবেন?
বিজয়ের অনেক ভার্সন রয়েছে। তবে সব থেকে ঝামেলামুক্ত ভার্সন হচ্ছে বিজয় একুশে ২০১০। এখানে আমরা শিখব কিভাবে কম্পিউটারে Bijoy Ekushe 2010 সেটআপ করতে হয় এবং এর কিছু বেসিক সেটিংস সম্পর্কে।
বিজয় কিবোর্ড ইনস্টল করার জন্য একই ফোল্ডারের ভেতরে আপনি নিম্নে দেখানো চিত্রের মতো এ রকম কিছু ফাইল ও ফোল্ডার পাবেন। এখানে থাকা BijoyEkushe ফাইলটির উপর ডাবল ক্লিক করুন।

নিম্নে দেখানো চিত্রের মতো একটি ইন্টারফেস চালু হবে। এখানকার চিত্রে দেখানো বাটনে ক্লিক করুন।

বিজয় এর সকল ভার্সন ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক ৩.৫ এর সাহায্যে চলে। তাই বিজয় কিবোর্ড ইনস্টল করার সময় আপনার কম্পিউটারে যদি ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক 3.5 ইতিপূর্বে ইন্সটল না করা থাকে তবে নিম্নে দেখানো চিত্রের মতো এ রকম একটি বার্তা দেখাবে। এখানে একসেপ্ট বাটনে ক্লিক করে ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক 3.5 ইন্সটল করে নিন।

আর যদি ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক 3.5 ইন্সটল করা থাকে তবে সরাসরি বিজয় অ্যাপ্লিকেশন সেটআপ উইজার্ড দেখাবে।
ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক 3.5 ইন্সটল করা
ধরে নিলাম আপনার কম্পিউটারে ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক 3.5 ইতিপূর্বে ইন্সটল করা নেই। সেক্ষেত্রে নিম্নের চিত্রের মতো বার্তা দেখাবে। সেখানে থাকা “Download and install this feature” অপশনে ক্লিক করুন।

ডট নেট ফ্রেমওয়ার্ক 3.5 ডাউনলোড শুরু হবে।

কিছু প্রয়োজনীয় ফাইল ডাউনলোড হবে। এতে একটু সময় নেবে। ডাউনলোড হয়ে গেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে তা ইনস্টল হবে। সব শেষে নিচে দেখানো এ রকম একটি মেসেজ দেখাবে।

এবারে ক্লোজ বাটনে ক্লিক করুন।
স্বয়ংক্রিয়ভাবে বিজয় কিবোর্ড সেটআপ উইজার্ড আসবে। সেখানে নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন।

এবারে আপনার কম্পিউটারের কোন লোকেশনে এ্যাপ্লিকেশনটি ইন্সটল হবে এবং কম্পিউটারে একাধিক ইউজার থাকলে তাদের জন্যও কি ইন্সটল হবে কিনা তা নির্বাচন করে নিয়ে নিচের চিত্রের মতো যে কোনোটি সিলেক্ট করে Next বাটনে ক্লিক করুন।

এবারে লাইসেন্স এগ্রিমেন্ট ডায়লগ বক্স আসবে। সেখানে আই এগ্রি রেডিও বাটনে ক্লিক করে নেক্সট বাটনে ক্লিক করুন।

কিছুক্ষণের মধ্যেই বিজয় কিবোর্ড ইনস্টল সম্পন্ন হয়ে গেলে সাকসেস মেসেজ দেখাবে। এবারে উইজার্ডটি ক্লোজ করে দিন।

এবার সেটআপ ইন্টারফেসটি কেটে দিন।
এবার স্টার্ট মেনুতে ক্লিক করে বিজয় অ্যাপ্লিকেশনের আইকনে ক্লিক করে তা চালু করুন। দেখবেন স্ক্রিনের উপরের বাম দিকে বিজয় কিবোর্ড চালু হবে। আপনি ইচ্ছে করলে সেটিকে টাস্কবারে বা টাস্ক বার হতে স্ক্রিনের উপরের দিকে স্থানান্তর করতে পারবেন। আবার মাউস দিয়ে ড্রাগ করে তা ডান দিকে বা বাম দিকে সরিয়েও নিতে পারবেন।

বিজয় একুশে সেটিংস
এবারে বিজয় কিবোর্ড প্রোগ্রামটির সেটিংস বাটনে ক্লিক করুন। বিজয় প্রোগ্রামটি যেন উইন্ডোজ চালু হবার পর প্রতিবারই আপনা হতেই চালু হয় সে জন্য নিম্নে দেখানো চিত্রের মতো Start Bijoy Ekushe when Windows starts এর টিক বক্সে ক্লিক করে টিক দিয়ে নিন।

উপরোক্ত চিত্রের মতো বিজয় কিবোর্ড এর অপর অপশন হলো Layout Activation Mode। এখানটায় দুটি অপশন রয়েছে। একটি হচ্ছে গ্লোবাল অপরটি হচ্ছে উইন্ডো বেজড। দেখতে পাবেন এখানটায় উইন্ডো বেজড অপশনটি সিলেক্ট করা রয়েছে।
উইন্ডোজ বেজড অপশন সিলেক্ট করা থাকলে আপনার কম্পিউটারে প্রতিটি উইন্ডোতে যে লেআউট অ্যাকটিভ থাকবে তা অপরিবর্তিত থাকবে। অর্থাৎ মনে করুন এমএস ওয়ার্ড -এ বিজয় কি বোর্ডের লেআউট রয়েছে ক্লাসিক। এই অবস্থায় এমএস এক্সেল এ গিয়ে দেখতে পাবেন বোর্ড English মোডেই রয়েছে।
অর্থাৎ প্রতিটি অ্যাপ্লিকেশন বা ফোল্ডার তথা উইন্ডো এর জন্য আপনি যে লেআউট সিলেক্ট করে রাখবেন, আপনি যখনি এক উইন্ডো হতে অপর উইন্ডোতে প্রবেশ করলে প্রতিটি উইন্ডোর জন্য আলাদা আলাদা লেআউট অ্যাকটিভই পাবেন।
অপর অপশন হচ্ছে গ্লোবাল মোড। এটি নির্বাচন করলে আপনি যে উইন্ডোতেই প্রবেশ করেন না কেনো বিজয় কিবোর্ড এর লেআউট অপরিবর্তিত থাকবে।
লেআউট সেটিংস
এবারে বিজয় অ্যাপ্লিকেশন এর Options এর ডান দিকের Layout ট্যাব এ ক্লিক করুন। সেখানে Select a Layout এর ডান দিকে Bijoy classic নির্বাচন করলে নিম্নের চিত্রের মতো সেটিংস দেখতে পাবেন। অর্থাৎ বিজয় কিবোর্ড এর ক্লাসিক লেআউট পেতে আপনাকে শর্টকাট কি Ctrl + Alt + B প্রেস করতে হবে।

ইউনিকোড টাইপ
বিজয় ক্লাসিক ব্যতিত অন্যান্য ইউনিকোড ফন্টে টাইপ করার জন্য নিম্নের চিত্রের মতো করে Bijoy Unicode লেআউটের জন্য সর্টকাট কি Ctrl + Alt + V সেট করে নিয়ে Ok বাটনে ক্লিক করুন।

এখন থেকে যে কোনো অ্যাপ্লিকেশনে বিজয় ক্লাসিক লেআউট নির্বাচন করার জন্য কি-বোর্ড হতে Ctrl + Alt + B প্রেস করে ক্লাসিক ফন্টে এবং কি-বোর্ড হতে Ctrl + Alt + V প্রেস করে ইউনিকোড ফন্টে অনায়াসে বাংলা টাইপ করতে পারবেন।
নিম্নে বিজয় কিবোর্ড এর বাংলা কি বোর্ড লে-আউট এর চিত্র দেয়া হলো

পরিশেষে, এখানকার কোন অংশ বুঝতে সমস্যা হলে নিম্নে কমেন্টের মাধ্যমে আমাদের জানাতে ভুলবেন না।
ভিডিও আকারে দেখতে-