একজন কম্পিউটার ব্যবহারকারী হিসেবে আমরা জানি যে, উইন্ডোজ নিঃসন্দেহে বিশ্বে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম। এ পর্যায়ে আমরা শিখব কিভাবে মাইক্রোসফট হতে জেনুইন উইন্ডোজ ১০ ডাউনলোড করবেন।
Table of Contents
Windows (উইন্ডোজ) কি?
উইন্ডোজ সম্পর্কে আর নতুন করে বলার মতো কিছুই নেই। আমরা সকলেই জানি ৪ এপ্রিল ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত মাইক্রোসফ্ট নামক প্রতিষ্ঠানের তৈরি একটি বহুল ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেম। এটি ব্যক্তিগত কম্পিউটার বা পিসি, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট এবং অন্যান্য কম্পিউটিং ডিভাইসে চালানোর জন্য ডিজাইন করা। উইন্ডোজ একটি গ্রাফিকাল ইউজার ইন্টারফেস প্রদান করে যা দৃষ্টি নন্দন বিভিন্ন আইকন, মেনু ইত্যাদির মাধ্যমে এর ব্যবহারকারীকে ইন্টারঅ্যাক্ট করতে দেয়।
উইন্ডোজ ওয়ার্ড প্রসেসর, ওয়েব ব্রাউজার, মিডিয়া প্লেয়ার এবং আরও অনেক কিছুসহ বিভিন্ন ধরণের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহারের সুবিধা দিয়ে থাকে। উইন্ডোজ বছরের পর বছর ধরে এর নির্মাতা মাইক্রোসফট হতে বিবর্তিত হয়েই আসছে।
সর্বপ্রথম ২০ নভেম্বর ১৯৮৫ সালে উইন্ডোজ এর প্রথম ভার্সন ১.০ বাজারে আনে। পরবর্তীতে তাদের প্রতিটি নতুন সংস্করণ নতুন বৈশিষ্ট্য এবং ক্রমাগত উন্নত ভার্সন বাজারে আনতেই থাকে। বর্তমানে উইন্ডোজ বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেমগুলির মধ্যে একটি রয়ে গেছে এবং লক্ষ লক্ষ লোক ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িক উদ্দেশ্যে এটি ব্যবহার করে থাকে।
কেন উইন্ডোজ এত জনপ্রিয়?
বিশ্বে সব থেকে জনপ্রিয় অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ। এর সব থেকে বড় কারণ হলো এটি User friendly এবং এটি গ্রাফিকাল User interface এর মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। যা ব্যবহার এবং নেভিগেট করা অত্যন্ত সহজ। সেই সাথে এটি হার্ডওয়্যার এবং সফ্টওয়্যারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে এটিকে বহুমুখী করে তোলে। যা বিভিন্ন কম্পিউটিং এর কাজে প্রয়োজনের সাথে সহজেই খাপ খায়।
এ ছাড়াও উইন্ডোজের একটি বড় প্রচার সম্প্রদায় রয়েছে যা অপারেটিং সিস্টেমের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন, প্যাকেজ প্রোগ্রাম এবং গেম এর নিয়মিত নতুন নতুন আইটেম তৈরী করে একটি বিশাল এরিয়া তৈরি করেছে।
Microsoft সময়ে সময়ে উইন্ডোজ এর আপডেট ও কারিগড়ি সহায়তা প্রদান করে থাকে। যা নিশ্চিত করে যে ব্যবহারকারীর নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্য তথা সিস্টেম ত্রুটির সমাধান। উইন্ডোজ এর কর্মক্ষমতা বৃদ্ধির অব্যাহত প্রচেষ্টা এটি ব্যক্তিগত এবং ব্যবসায়িকসহ বিভিন্ন কম্পিউটিংয়ের জন্য একটি নির্ভরযোগ্য ও নিরাপদ পছন্দ হিসেবে একে গড়ে তুলেছে অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং অন্যন্য।
উইন্ডোজ এর বিকল্প কি?
যদিও উইন্ডোজ একটি বহুল ব্যবহৃত অপারেটিং সিস্টেম তারপরও এর বেশ কিছু বিকল্প রয়েছে। উইন্ডোজ এর বিকল্প হিসেবে রয়েছে Mac অপারেটিং সিস্টেম। যা অ্যাপল দ্বারা ডিজাইন করা হয়েছে এবং অ্যাপলের হার্ডওয়্যারে চলে। mac OS একটি মসৃণ এবং স্বজ্ঞাত ইন্টারফেস প্রদান করে এবং এর স্থায়িত্ব এবং শক্তিশালী নিরাপত্তা বৈশিষ্ট্যের জন্যও এটি বেশ পরিচিত।
আরেকটি বিকল্প হল লিনাক্স। যা একটি মুক্ত এবং ওপেন সোর্স অপারেটিং সিস্টেম। Linux ব্যবহারকারীদের সর্বাধিক কাস্টমাইজেশন সুবিধা প্রদান করে এবং বিভিন্ন হার্ডওয়্যার কনফিগারেশনে চালানোতে শিথীলতা এনে একে নানা ভাবে ডেভেলপ করার সুবিধা দিয়ে থাকে।
Chrome OS হল আরেকটি বিকল্প যা Chromebook ল্যাপটপে চালানোর জন্য ডিজাইন করা হয়েছে এবং Google Chrome ওয়েব ব্রাউজারকে ঘিরে তৈরি করা হয়েছে। এটি একটি সুশৃঙ্খল এবং সহজবোধ্য ইন্টারফেস প্রদান করে থাকে। যারা প্রাথমিকভাবে ওয়েব-ভিত্তিক নানা ধরণের অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে থাকেন তাদের জন্য এটি আদর্শ মানের হতে পারে।
এ ছাড়াও ফ্রিবিএসডি, হাইকু এবং রিঅ্যাক্টস-এর মতো বেশ কয়েকটি ছোট এবং কম পরিচিত অপারেটিং সিস্টেম রয়েছে। একটি অপারেটিং সিস্টেমের পছন্দ ব্যক্তিগত পছন্দ এবং ব্যক্তির প্রয়োজনীয়তার উপর নির্ভর করে থাকে।
উইন্ডোজ কি বিনামূল্যে পাওয়া যায়?
উইন্ডোজ সাধারণত বিনামূল্যে হয় না। যদিও কিছু সংস্করণ এবং পরিস্থিতি রয়েছে যেখানে মাইক্রোসফট এর উইন্ডোজ বিনামূল্যে পাওয়া যেতে পারে। Windows এর সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত সংস্করণ Windows 10, এটি ব্যবহার করার জন্য আইনত আপনাকে একটি লাইসেন্স কিনতে হবে৷ কিছু কিছু ক্ষেত্রে উইন্ডোজ বিনামূল্যেও পাওয়া যেতে পারে বা কম খরচে পাওয়া যেতে পারে।
যেমন একাডেমিক প্রোগ্রামের মাধ্যমে বা আপনি যদি এমন একটি কম্পিউটার কিনে থাকেন যাতে উইন্ডোজ আগে থেকে ইনস্টল করা রয়েছে।
কিছু ফিচার আনলক অবস্থায় আপনি উইন্ডোজ অনায়াসে ব্যবহার করতে পারবেন। সকল ফিচার ও বিশেষ সুবিধা পেতে আপনাকে অবশ্যই উইন্ডোজ এর লাইসন্সে কিনে তা ব্যবহার করতে হতে পারে।
কেন উইন্ডোজ ১০ ডাউনলোড করবেন?
বাজারে উইন্ডোজ সেটআপ দেবার জন্য অনেক ধরণের ডিভিডি পাওয়া যায়। কিছু কিছু অরিজিনাল উইন্ডোজ পাওয়া গেলেও অর্থ স্বল্পতার কারণে আমরা সস্তায় যেগুলো পাওয়া যায় সেগুলো কিনে ব্যবহার করে থাকি। এগুলোতে অরিজিনাল উইন্ডোজ থাকে না।
উইন্ডোজ এর বিভিন্ন ফাইলকে কিছুটা রদবদল করে কাস্টমাইজড ভার্সন করা থাকে। এ ছাড়াও এতে নানা ধরণের ভাইরাস বা মালওয়ার যুক্ত থাকতে পারে। যা পরবর্তীতে আপনার কম্পিউটার হতে ডেটা চুরি, কম্পিউটার স্লো হবার কারণ হতে পারে। তাই আমাদের ফ্রেস তথা প্রকৃত মাইক্রোসফট এর উইন্ডোজ ১০ ডাউনলোড করে তা ব্যবহার করা উচিত।
যা পেনড্রাইভ এর মাধ্যমে বুটেবল করে নিয়ে অনায়াসে আপনি এক বা একাধিক কম্পিউটারে সেটআপ দেবার জন্য ব্যবহার করে নিতে পারেন।
কিভাবে উইন্ডোজ ১০ ডাউনলোড করবেন?
এখানে আমরা উইন্ডোজ ১০ এর একটি আইএসও ফাইল ডাউনলোড করা শিখব। উইন্ডোজের আইএসও ফাইল আমরা শুধুমাত্র মাইক্রোসফট এর অফিসিয়াল ওয়েব সাইট হতেই ডাউনলোড করে নেব।
এ জন্য আপনার কম্পিউটারের যে কোন একটি ব্রাউজার ওপেন করে নিন। এবার ব্রাউজারের এ্যাড্রেসবারে টাইপ করুন download windows ১০ এবং কি বোর্ড হতে এন্টার কি প্রেস করুন। নিম্নের চিত্রের মতো ফলাফল দেখাবে।

এখানে থাকা মাইক্রোসফট এর ওয়েব সাইট এ তথা প্রথম টাতে ক্লিক করুন। অথবা এখানে ক্লিক করুন। এবার ব্রাউজারের যে কোনো স্থানে মাউসের রাইট বাটনে ক্লিক করে Inspect অপশনে ক্লিক করুন।

নিম্নের চিত্রের মতো উইন্ডো প্রদর্শিত হবে। সেখানে ডান দিকে চিত্রে দেখানো আইকনটিতে ক্লিক করুন।

এরপর কী-বোর্ড হতে একবার ফাংশন কী-৫ চাপ দিন অথবা ব্রাউজারটি রিলোড করুন এবং মাউসের সাহায্যে স্ক্রল করে নিচের দিকে দেখতে পাবেন Select edition । সেখানে ক্লিক করে Windows 10 নির্বাচন করে নিন।

এবারে Confirm বাটনে ক্লিক করুন। নিম্নের চিত্রের মতো Product language সিলেক্ট করার অপশন হতে English (United States) নির্বাচন করে নিন।

এবারে Confirm বাটনে ক্লিক করুন। নিম্নের চিত্রের মতো উইন্ডোজ আইএসও এর কত বিট ডাউনলোড করতে চান সেটির উপর ক্লিক করুন।

ব্যাস উইন্ডোজ ১০ ISO ফাইল ডাউনলোড শুরু হয়ে যাবে।
পরিশেষে, আশা করছি এখান থেকে আপনি জেনুইন উইন্ডোজ ১০ ডাউনলোড সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পেরেছেন। কোন অংশ বুঝতে সমস্যা হলে আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে জানাতে পারেন।
ভিডিও আকারে দেখতে-